সংক্ষেপে খাদ্য অধিদপ্তর
১। খাদ্য অধিদপ্তর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একমাত্র সংস্থা। ঔপনিবেশিক আমলে ১৯৪৩ সালে বাংলার দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করার জন্য তৎকালীন প্রাদেশিক সরকার Bengal Rationing Order/1943 জারি করে এবং Bengal Civil Supplies Dept. প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৫৫ সাল হতে ১৯৫৬ সালে পর্যায়ক্রমে সিভিল সার্ভিস বিভাগ অবলুপ্ত করা হয়। অবলুপ্তির কুফল হিসেবে খাদ্য দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পায় এবং দেশে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ফলে ১৯৫৬ সালে তৎকালীন সরকার কর্তৃক তড়িঘড়ি করে বেসরকারি সরবরাহ বিভাগের অবয়বে খাদ্য বিভাগ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৫৭ সালে খাদ্য বিভাগকে একটি স্থায়ী বিভাগে রূপান্তর করা হয়। স্বাধীনতা অর্জনের পর Food and Civil Supplies Ministry এর অধীনে পূর্বের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোসহ ‘খাদ্য ও বেসামরিক সরবরাহ বিভাগ’ নামে পাঁচটি পরিদপ্তরের সমন্বয়ে খাদ্য বিভাগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরবর্তীতে পরিদপ্তরসমূহের সমন্বয়ে নতুনভাবে খাদ্য অধিদপ্তর (Directorate General of Food) নামে পুনর্গঠন ও পুনর্বিন্যাসপূর্বক বর্তমান প্রাতিষ্ঠানিক রূপ প্রদান করা হয়। যেহেতু অতীতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় খাদ্য ঘাটতি ছিল; সেহেতু খাদ্য অধিদপ্তর বাংলাদেশ সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের একটিতে পরিণত হয়। বর্তমানে দেশের আপৎকালীন মজুত গড়ে তোলা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে খাদ্য অধিদপ্তর বাংলাদেশ সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।
২। খাদ্য অধিদপ্তর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত একমাত্র সংস্থা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতিতে অবিভক্ত বাংলায় উদ্ভূত ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ (Great Famine) মোকাবেলায় বর্তমানের খাদ্য অধিদপ্তর ঐ সময়ে সিভিল সাপ্লাই বিভাগ নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত বিভক্ত হলে খাদ্য ও বেসামরিক সরবরাহ (Food & Civil Supply Dept.) বিভাগ নামে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যাত্রা শুরু করে। ১৯৫৭ সালে খাদ্য বিভাগের স্থায়ী কাঠামো প্রদান করা হলেও প্রশাসন, সংগ্রহ, সরবরাহ, বন্টন ও রেশনিং, চলাচল ও সংরক্ষণ, পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ, হিসাব ও অর্থ ইত্যাদি পরিদপ্তর পৃথকভাবে কার্য সম্পাদন অব্যাহত রাখে। ১৯৮৪ সালে প্রশাসনিক সংস্কার কার্যক্রমের ফলে ৬টি পরিদপ্তর একীভূত হয়ে পুনর্গঠিত খাদ্য অধিদপ্তর (Directorate General of Food) প্রতিষ্ঠা লাভ করে। নববইয়ের দশকের শেষভাগে প্রশিক্ষণ নামে নতুন একটি বিভাগ খাদ্য অধিদপ্তরে সংযোজিত হয়।
মহাপরিচালক খাদ্য অধিদপ্তরের প্রধান নির্বাহী হিসেবে সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন। একজন অতিরিক্ত মহাপরিচালক অপারেশনাল কর্মকান্ডে মহাপরিচালককে সার্বিক সহায়তা প্রদান করেন। মহাপরিচালকের বিভিন্নমুখী কর্মকান্ডের জন্য অধিদপ্তরের ৭টি বিভাগে ৭ জন পরিচালক নিয়োজিত আছেন। খাদ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ পরিচালকবৃন্দের অধীনে অর্পিত নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পাদন করেন। মাঠ পর্যায়ে খাদ্য ব্যবস্থাপনার সার্বিক কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য দেশের প্রশাসনিক বিভাগের সাথে সঙ্গতি রেখে সারা দেশকে ৭টি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে। অঞ্চল তথা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অধীনে জেলাসমূহের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকগণ। প্রতি উপজেলায় ১ জন করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিয়োজিত আছেন। দেশজুড়ে মোট ৫টি সাইলো, ১৩টি সিএসডি এবং ৬৩১টি এলএসডি আছে। এসকল খাদ্য গুদামের বর্তমান কার্যকরী ধারণ ক্ষমতা প্রায় ১৯.৫০ লক্ষ মে: টন। সারা দেশের কৌশলগত স্থানে সাইলো, সিএসডি এবং দেশের প্রায় সকল জেলার প্রতিটি উপজেলায় কমপক্ষে ১টি এলএসডি, গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় দুই বা ততোধিক এলএসডি’র মাধ্যমে খাদ্য ব্যবস্থাপনার প্রশাসনিক ও অপারেশনাল কার্যাবলি সম্পাদন করা হয়।
তার ধারাবাহিকতায় ১৯৮৪ সাল হতে মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলায় “উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়” হিসেবে যাত্রা শুরু করে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস